পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষাকর্মী ইউনিয়নের ঐতিহাসিক পটভূমি
দেখতে দেখতে সংগঠন ৪০তম বর্ষে পদার্পণ করলো। কোনো একটি সংগঠনের ৪০ বছর বহু ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে কলেজের কর্মচারীদের ডাকা হতো অ-শিক্ষক কর্মী হিসেবে, কথাটি সঠিক যে তারা শিক্ষক বলতে সাধারণভাবে যা ভাবেন তারা তা নয়। কিন্তু শিক্ষার বিষয় যদি বলতে হয় তা হলে প্রায় সকলেই শিক্ষক। প্রত্যেক মানুষের থেকে কিছু না কিছু শেখার আছে। শুধুমাত্র পুঁথি পড়ে যারা শিক্ষাদান করেন তারাই শিক্ষক আর অন্যরা অ-শিক্ষক এই ধারণাটা কিঞ্চিৎ ভুল বলে মনে হয় ।পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা ছিল মর্জিমাফিক উপর দাঁড়িয়ে। কোনো নিয়মনীতি ছিল না। চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রেও মর্জিমাফিক উপর নির্ভরশীল ছিল। কলেজ পরিচালন কমিটি যা ছিল তার গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ছিল না। অধ্যাপক, কর্মচারী তাদের বেতনের কোনো ঠিক-ঠিকানা ছিল না। ছাত্রদের বেতনের উপর নির্ভর করে বসে থাকতে হতো। প্রতিমাসে সঠিক সময়ে বেতন পাওয়া ও নিয়মিত পাওয়ার উপায় ছিল না। কর্মচারীরা অনেক সময় কর্তৃপক্ষের ব্যক্তিগত কর্মচারী মনে করে তাদের সেইভাবে খাটাতেন। কোনো প্রতিবাদ করার উপায় ছিল না। চাকুরীর কোনো গ্যারান্টি ছিল না। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কর্মচারীদের একটি সংগঠন ছিল। কিন্তু সেই সংগঠনও গণতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালিত হতো না।পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা আন্দোলন, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন এর পুরোমাত্রায় নেতৃত্ব ছিল বামপন্থীদের হাতে। কিন্তু রাজ্য সরকারে ছিল না। দু-দফায় যুক্তফ্রন্ট সরকারে আসে। তখন শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে তাদের স্বার্থে যুক্তফ্রন্ট সরকার কিছু করার চেষ্টা করে কিন্তু সরকারের স্থায়িত্ব ছিল না। ১৯৭০-৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গে অরাজকতার সৃষ্টি হয় এবং আধা ফ্যাসিস্ট আক্রমণ শুরু হয়। তখন দেশের সরকারে ছিল কংগ্রেস দল। '৭২ সালে বিধানসভায় জাল জুয়াচুরি নির্বাচন করে রাজ্যে তারাই ক্ষমতায় ছিল। ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী জরুরী অবস্থা জারি করে ক্ষমতাকে এককভাবে কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা করে। পরবর্তী দেশের নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধী পরাস্ত হন এবং জনতা দলের সরকার গঠন হয়। এই সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে অরাজকতা প্রাধান্য পায়, গণটোকাটুকি, পরীক্ষাহলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করা, পরিদর্শকদের ভয় দেখিয়ে টোকাটুকি করে পরীক্ষা দেওয়া এই ভাবে চলতে থাকে। ৭৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বামপন্থীরা রাজ্য সরকারে আসীন হয়। এত দিনের বিশৃঙ্খলাকে রুখে নূতনভাবে রাজ্য সরকার পরিচালিত হয়। নেতৃত্বে ছিলেন শ্রদ্ধেয় কমরেড জ্যোতি বসু। সরকার প্রথমেই অন্যায়ভাবে কারাবন্দীদের মুক্তি ঘোষণা করেন। আমূল ভূমি সংস্কারের মধ্য দিয়ে গ্রামে উন্নতি, কৃষকদের হাতে অর্থ যোগান দেওয়া, পাড়া ছাড়া মানুষদের ঘরে ফিরিয়ে আনা, যারা ঘর ছাড়া হয়েছিলেন চাকুরীতে যোগদান করতে পারতেন না তাদেরকে পুনর্বহাল করানো ছিল বামপন্থী সরকারের কাজ। যারা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী স্কুল-কলেজ যেতে পারতেন না তারা পুনর্বহালের মধ্য দিয়ে চাকুরী করতে পারলেদ। রাজ্যে বহু নাগরিকের ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলা ছিল তার মধ্যে কলেজ শিক্ষাকর্মীরা ছিল; তারাও পুনর্বহাল পেল।
নূতনভাবে শিক্ষা আন্দোলন শুরু হলো। শিক্ষক শিক্ষাকর্মীরা শিক্ষা গণতান্ত্রিক সংস্থা নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। সেই সংগঠনের নামে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হলো অর্থাৎ গণতান্ত্রিক পথে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে হবে। বামফ্রন্ট সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। স্কুলগুলোতে বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে মনোনিত কমিটি গঠন করা, কলেজগুলোতে নির্বাচিত শিক্ষক, কর্মচারীদের নিয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে গভর্নিং বডি তৈরী করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনেট কোর্ট এ সব অংশের মানুষের প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে সেনেট কোর্ট গঠন করলো। শিক্ষাকর্মীরাও তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে পারলো। কলেজ প্রশাসন ছিল দুটো ভাগে—একটি ছিল স্পনসর্ড কলেজ আর একটা ছিল প্রাইভেট কলেজ নামে। কমরেড ব্রজ ঘোষাল চাকুরী করতেন ভৈরব গাঙ্গুলী কলেজে সেই থেকে স্পনসর্ড কলেজ সংগঠন গড়ে তোলার জন্য কমরেড ব্রজ ঘোষালের ভূমিকা ছিল অন্যতম। সমস্ত স্পনসর্ড কলেজগুলোকে নিয়ে স্পনসর্ড কলেজ শিক্ষাকর্মী সমিতি ছিল ষাটের দশক থেকে। কমরেড ব্রজ ঘোষাল সমিতির কাজ করতেন, তার নেতৃত্বে নিউ আলিপুর কলেজের অমিয় সরকারও ইউনিয়নের সাথে যুক্ত ছিলেন। আর প্রাইভেট কলেজগুলোকে নিয়ে অপর একটি সমিতি-এর নেতৃত্বে ছিল দক্ষিণপন্থী মানুষেরা এই সংগঠনের মধ্যে বামপন্থী মানসিকতার মানুষরাও যুক্ত ছিলেন। তাদের নাম না উল্লেখ করলে অন্যায় হবে যেমন নেতাজী নগর কলেজের কমরেড কেশবলাল চ্যাটার্জী, জয়পুরিয়া কলেজের কমরেড শঙ্কর ভট্টাচার্য, বসিরহাট কলেজের কমরেড সুনীল চক্রবর্তী, ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের কমরেড নির্মল দে। এছাড়া অসংখ্য বামপন্থী মানসিকতার কর্মচারী। কলেজ কর্মচারী সমিতির অগণতান্ত্রিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে বিল্ডিং ফান্ড-এর নামে বহু টাকা কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায় করে তার অপব্যবহার করা, শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য চালাবার জন্য অফ-ডের মত দাবীকে সামনে রেখে সমিতির নেতৃত্ব চেষ্টা করে। সেই সময়ে নেতাজী নগর কলেজের অধিকাংশ কর্মচারী বামপন্থায় বিশ্বাসী তাদেরকে কমরেড সঞ্জয় ব্যানার্জীর নেতৃত্বে সংগঠিত করা হয়। কমরেড কল্যাণ চ্যাটার্জী, কমরেড সুব্রত মহান্তি, কমরেড পরেশলাল দত্ত এবং কমরেড নীলকমল সাহা সেই কাজে যুক্ত ছিলেন। সমিতির মধ্যে বামপন্থী মানসিকতার কর্মচারীরা সমিতির অভ্যন্তরে লড়াই করতে থাকে। বিভিন্ন সাধারণ সভায় তার প্রতিফলন লক্ষ্য করা গেছে। ইতিমধ্যে কর্মচারী সমিতির মধ্য থেকে কম সুনীল চক্রবর্তী, কমরেড নির্মল দে, কমরেড কেশবলাল চ্যাটার্জীরা বেরিয়ে আসেন এবং ১৯৮০ সালের ১০ই মে কনভেনশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেন। ১৯৮১ সালে কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য পে কমিশন এর অন্তর্ভুক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে সমিতি দুভাগ হয়ে যায়। এই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট নির্বাচন ঘোষিত হয়। সেই নির্বাচনে কমরেড অরশ বসু ও কমরেড সুনীল চক্রবর্তী শিক্ষা গণতান্ত্রিক কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করেন অপর দিকে সমিতির পক্ষ থেকে শ্রী অজিত ভট্টাচার্য এবং নির্বাচনে কমরেড অরুণ বসু বিপুল ভোটে জয়ী হল এবং তমলুক কলেজের বিমান চক্রবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই সমিতির পক্ষ থেকে শ্রী অজিত ভট্টাচাৰ্য্য জয়ী হন।এই অবস্থায় কর্মচারীদের সংগঠিত করার জন্য কোথাও কর্মচারীদের সংগঠিত করা হয়। এই সংগঠন গড়ার ক্ষেত্রে গোপনে কোথাও প্রকাশ্যে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে বামপন্থী বামপন্থী অধ্যাপকরাও বিভিন্ন ভাবে সহযািেগতা করেন। ধীরে ধীরে কমরেড ব্রজ ঘোষালের নেতৃত্বে স্পনসর্ড কলেজের কর্মচারীরা এবং কেশবলাল চ্যাটার্জী, সুনীল সংগঠন ছিল। তার নাম ছিল পশ্চিমবঙ্গ কলেজ কর্মচারী চক্রবর্তী, নির্মল দে এদের নেতৃত্বে প্রাইভেট কলেজের কর্মচারীরা আয়ুধ ২৮সংগঠিত হতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের নেতৃত্ব ও শিক্ষাকর্মীদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেন। যেমন আশিস রায়, পরিমল দাস মৃদুল সেন। আরো অনেক নাম হয়ত আছে তা আমার পক্ষে জানা সম্ভব হয় নি। তারপর বামপন্থী নেতৃত্বের পরামর্শে স্পনসর্ড কলেজের কর্মচারী সমিতি এবং প্রাইভেট কলেজের কর্মচারীদের নিয়ে একটি সংগঠন সমন্বয় কমিটির নামে আত্মপ্রকাশ করে।
১৯৮২ সালে ১০ই অক্টোবর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ হলে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষাকর্মী ইউনিয়ন গঠিত হয় । এই শিক্ষাকর্মী নামের প্রস্তাবক ছিলেন কমরেড কল্যাণ চ্যাটার্জী, তিনি নেতাজী নগর কলেজের কর্মচারী ছিলেন।
প্রথম সভাপতি হন অধ্যাপক সন্তোষ মিত্র
সম্পাদক হন কমরেড অরুণ বসু।
কেন্দ্রীয় ভাবে কিছু মানুষ সংগঠন গড়ার কাজ দায়িত্বের সাথে করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ভাবে কাজ করলেই কেন্দ্রীয় সংগঠন গড়ে ওঠে না তার জন্য জেলাতে বিভিন্ন মানুষ এগিয়ে এসেছেন তাদের নামও উল্লেখযোগ্য। যেমন দার্জিলিং জেলার অসিত চক্রবর্তী, জলপাইগুড়ি জেলার জীবেশ দত্ত বিশ্বাস, এ, সি কলেজ অফ কমার্সের কল্যাণ দে, মালদা জেলার চাচল কলেজের তপন ভট্টাচার্য্য, মালদা কলেজের অমল দাস, বাঁকুড়া জেলার রামানন্দ কলেজের সমিত চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদ জেলার মদন মল, অশোক ঘোষ, দীনবন্ধু ঘোষ, শম্ভুনাথ রায়, আনন্দগোপাল সাহা, বীরভূম জেলার বোলপুর কলেজের ব্রজেন মুখার্জী, হেতমপুর কলেজের সমর গুপ্ত, হুগলী জেলার বিমল চ্যাটার্জী, কিশোর দাস, পঙ্কজ দাস, শঙ্কর হাজরা, অবিভক্ত ২৪ পরগণা জেলার দীপক ঘোষ, ফশীভূষণ দাস, সুব্রত ধর, উজ্জ্বল অধিকারী, নিকুঞ্জ ঝুলকি, অরুণ দাস, বাদলচন্দ্র অধিকারী। এই সময় ২৪ পরগনা জেলা একটিই ছিল। পুরুলিয়া জেলার বুটন মাহাতো, অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা কলেজের প্রদীপ আচাৰ্য্য, এন, এল খান মহিলা কলেজের মুক্তারঞ্জন ঘোষ, মহঃ সফিক। নদীয়া জেলার মিহির মজুমদার, অবিভক্ত বর্ধমান জেলার শ্রীকুমার দুবে, লক্ষ্মীকান্ত ব্যানার্জী, রাজ কলেজের শীতল সিনহা, যদুকিশোর গোস্বামী, আশিস ব্যানার্জী, হাওড়া জেলার বিশ্বনাথ সরকার। প্রথম কার্য্যকমিটির সদস্যরা হলেন— পরিমল দাস, কেশবলাল চ্যাটার্জী, নির্মল দে, বিশ্বনাথ সরকার, বিজিত চৌধুরী, শ্রীকুমার দুবে, অরুণ বাসে, বন্ধু ঘোষাল, কল্যাণ চ্যাটার্জী, পঙ্কজ দাস, দীপক ঘোষ, মৃণাল দাস, নিত্যানন্দ দাস, নীলকমল সাহা, এন গোপী, কৃষ্ণপদ দাস, অমিয় আয়ুধ সরকার, সুষেন পাল, নিকুঞ্জ কুলকি, সুনীল চক্রবর্তী, ফণীভূষণ দাস, শৈবাল সোম, অরুণ দাস, উজ্জ্বল অধিকারী, অরুণ গাঙ্গুলী, সুব্রত ধর, লক্ষ্মী সিনহা, যদুকিশোর গোস্বামী, আশিস ব্যানার্জী, কিশোর দাস, শঙ্কর হাজরা, বিমল চ্যাটার্জী, সমর গুপ্ত, প্রভাতী মিশ্র, ব্রজেন মুখার্জী, মুক্তারঞ্জন ঘোষ, মহঃ সফি, প্রদীপ আচার্য্য, লক্ষ্মী মিশ্র, মিহির মজুমদার, দুলাল মোদক, গণেশ ঘোষাল, অসিত চক্রবর্তী, তপন ভট্টাচার্য্য, বটন মাহাতো ও পার্বতী চৌধুরী। প্রথম সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ছিলেন, সভাপতি— সন্তোষ মিত্র, কার্যকরী সভাপতি – পরিমল দাস, সহসভাপতি— কেশবলাল চ্যাটার্জী, নির্মল দে, বিশ্বনাথ সরকার, বিজিত চৌধুরী, শ্রীকুমার দুবে, সাধারণ সম্পাদক—অরুণ বসু, পঙ্কজ দাস, কোষাধ্যক্ষ—মৃণাল দাস, অফিস সম্পাদক—নির্মল গাঙ্গুলী। কিছুদিন পরে সভাপতি হন পরিমল দাস। পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষাকর্মী ইউনিয়ন আজ ৪০ বছরে পদার্পন করেছে। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষাকর্মী ইউনিয়ন সদস্যরা প্রত্যেকটি সেনেট, কোর্ট নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং কলেজ পরিচালন সমিতিতেও পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষাকর্মী ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাই প্রতিনিধিত্ব করেন। বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর যে দাবীগুলোকে আদায় করা সম্ভব হয়েছে তার মধ্যে পে কমিশনের আওতায় থেকে পেনশন, গ্রাচুইটি, প্রতিমাসে বেতনের গ্যারান্টি, কেন্দ্রীয় হারে D.A পাওয়া, প্রোমোশনের ক্ষেত্রে গ্রুপ ডি থেকে গ্রুপ-সিতে প্রোমোশন, এলডিসি থেকে ইউডিসিতে প্রোমোশন এবং ইউডিসি থেকে প্রধান করনিকে প্রোমোশন, কর্মচারীদের সম্মানের সাথে কলেজের কাজে যুক্ত হওয়া, কলেজের বিভিন্ন উন্নয়নের সাথে শিক্ষাকর্মীদের যুক্ত করা।
শিক্ষাকর্মী ইউনিয়নের অভীষ্ট লক্ষ্য বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসার, কলেজ শিক্ষাকর্মীদের স্বার্থ উন্নতি ও রক্ষা করা এবং শিক্ষাকর্মী স্বার্থে অন্যান্য সংগঠনের সাথে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা, জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলেজ শিক্ষাকর্মীদের মর্যাদা ও নৈতিক মান রক্ষা করা, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও নিরাপত্তার উপর যে কোনো আক্রমণ এবং সর্বপ্রকার শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা, কলেজ শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের চেতনার উন্নতিসাধন করা, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষক, ছাত্র এবং বৃহত্তর জনগণের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। এই কাজ যদি করতে পারি তবেই ৪০ বছরের সংগঠন যোগ্য সম্মান পাবে।
